📌 ভূমিকা
ম্যালেরিয়া হলো এক ধরনের সংক্রামক জ্বর, যা অ্যানোফিলিস মশার কামড়ের মাধ্যমে প্লাজমোডিয়াম জীবাণু শরীরে প্রবেশ করলে হয়। এটি তীব্র কাঁপুনি, উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর এবং প্রচণ্ড ঘামের মাধ্যমে প্রকাশ পায়। প্রাচীন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ম্যালেরিয়া নিরাময়ের জন্য বিভিন্ন ভেষজ ব্যবহারের উল্লেখ রয়েছে, যা আজও কার্যকর।
📌 ম্যালেরিয়ার কারণ
ম্যালেরিয়া প্লাজমোডিয়াম (Plasmodium) নামক পরজীবীর কারণে হয়, যা মশার মাধ্যমে সংক্রমিত হয়। মূলত অ্যানোফিলিস (Anopheles) মশা এই জীবাণু বহন করে এবং কামড়ানোর মাধ্যমে এটি মানুষের রক্তে ছড়িয়ে দেয়।
📌 ম্যালেরিয়ার লক্ষণ
ম্যালেরিয়া হলে সাধারণত ১০-১৫ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো প্রকাশ পায়। এর প্রধান লক্ষণগুলো হলো—
🔴 হঠাৎ করে কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসা এবং আবার হঠাৎ কমে যাওয়া
🔴 শরীর ব্যথা ও মাথা দপদপ করা
🔴 প্রচণ্ড তৃষ্ণা অনুভব করা
🔴 মাঝেমধ্যে কাশি হওয়া
🔴 অত্যধিক ঘাম হওয়া
🔴 শরীর দুর্বল হয়ে পড়া ও ক্ষুধামন্দা
📌 আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা
ম্যালেরিয়ার জন্য নিচের আয়ুর্বেদিক ওষুধটি অত্যন্ত কার্যকর:
👉 কীভাবে প্রস্তুত ও গ্রহণ করবেন?
✔ ১০ গ্রাম চিরতা
✔ ১০ গ্রাম গুলঞ্চ
✔ ১০ গ্রাম কী
✔ ১০ গ্রাম ক্ষেতপাপড়া
✔ ১০ গ্রাম তুলসী পাতা
✔ ৫ গ্রাম বাসক পাতা
✔ ১ কেজি পানি
🔹 প্রস্তুত প্রণালী:
🟢 সব উপকরণ একসঙ্গে ১ কেজি পানিতে সিদ্ধ করতে হবে।
🟢 পানি ২০০ গ্রাম হলে নামিয়ে ঠান্ডা করে ছেঁকে নিতে হবে।
🟢 এই জল রোজ সকালে ও সন্ধ্যায় আধ কাপ করে মধু মিশিয়ে পান করতে হবে।
⏳ ব্যবহারের সময়সীমা: ৭ দিন
📌 পথ্য ও খাদ্যাভ্যাস
জ্বর হলে হজম ক্ষমতা কমে যায়, তাই হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত।
✅ যা খাওয়া উচিত:
✔ আটার রুটি (ভাত না খাওয়াই ভালো)
✔ শাকসবজি ও হালকা স্যুপ
✔ নারকেলের পানি ও লেবুর শরবত
✔ তুলসী পাতা বা আদা চা
🚫 যা এড়িয়ে চলা উচিত:
❌ অতিরিক্ত মশলাদার ও ভাজা-পোড়া খাবার
❌ অতিরিক্ত ঠান্ডা বা বরফযুক্ত খাবার
❌ ভারী ও চর্বিযুক্ত খাবার
📌 উপসংহার
ম্যালেরিয়া একটি প্রতিরোধযোগ্য ও নিরাময়যোগ্য রোগ। মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করতে হলে মশারি ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং রাতে ঘুমানোর সময় শরীর ঢেকে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসার মাধ্যমে ম্যালেরিয়ার উপসর্গ সহজেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
📌 Sources & Credits
📖 তথ্যের উৎস: আয়ুর্বেদ ঔষধ দর্শন শাস্ত্র
✍️ লেখক: বৈদ্যরাজ আচার্য্য বালকৃষ্ণ মহারাজ
🏢 প্রকাশক: ডায়মন্ড প্রকাশন (দিল্লী)
📍 উৎস: দিব্য মন্দির ট্রাস্ট, কনখল, হরিদ্বার
(এই বই সম্পর্কে আরও জানতে, অনুগ্রহ করে মূল বইটি পড়ুন।)
0 মন্তব্যসমূহ